দেশ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ছাড়া বিকল্প নেই : জাহেদ

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে আমেরিকায় আছেন। সেখানে বিখ্যাত সঞ্চালক মেহেদী হাসানের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান নিজের ইউটিউব চ্যানেল জাহেদস টেইক-এ এসে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘পুরো সাক্ষাৎকারের মাত্র পাঁচ মিনিটের একটি প্রিভিউ ও কিছু ক্লিপ থেকে রাজনৈতিক বিচারে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছে।

 

সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর পেরিয়ে গেলেও কেন এখনো জাতীয় নির্বাচন হয়নি এবং সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেও অনেকেই এখনই নির্বাচন চান। নেপালসহ অন্যান্য দেশ দ্রুত নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রাখছে, তাহলে বাংলাদেশ কেন প্রায় ১৮ মাস সময় নিচ্ছে?’
প্রধান উপদেষ্টা উত্তরে বলেন, ‘অনেক মানুষ নির্বাচন চাইছে কিন্তু জনমত বিভক্ত; কেউ বলছে আপনারাই থাকুন পাঁচ বছর, দশ বছর বা আরো বেশি। তবে শুধু নির্বাচন করলেই সব সমস্যা মিটবে না; আগে কাঠামোগত সংস্কার দরকার। বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও নির্বাচন ব্যবস্থার জটগুলো ঠিক করে নেওয়া জরুরি, যাতে পুনরায় একই দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহার না ঘটতে পারে।

 

জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘ড. ইউনূসের ভাষ্য অনুযায়ী জনগণ আপনিই থাকুন ৫/১০/৫০ বছর বলছে। এটা অনেকেই দাস্যমূলক বা ডেরোগ্যাটোরি মনে করেছেন। আরো কিছু লোক মনে করেন, এই যুক্তি আসলে নির্বাচনের স্বীকৃতি ও সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং কিছু লোক ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনায়ও নেমেছেন।

 

অনেক পরিচিত ব্যক্তির অভিমতও এখানে উল্লেখযোগ্য। উদাহরণ স্বরূপ, ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমের মত এক সময়কার গণ-আন্দোলনকারীরা এখন বলে থাকেন, নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত হলে যেকোনো সরকার থাকুক, সেটি তাদের তেমন সমস্যায় ফেলবে না; অর্থাৎ দলের বিভাজনই প্রধান বিষয় নয়, নাগরিক অধিকারই এসেছে প্রথম সারিতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের মধ্যে একাংশ মনে করে নির্বাচিত স্থায়ী সরকার তাদের ভাগ্য বদলাবে না যদি সেই সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত থাকে। ফলে তারা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চাইছে, যা প্রয়োজনে অস্থায়ী সরকারের হাতে দীর্ঘতর সময়ের প্রয়োজন মনে হতে পারে। ড. ইউনূস এ ভাবনাকে তুলে ধরে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মানুষ যদি সুশাসন ও দুর্নীতি-হীনতা চায়, তাহলে নির্বাচনই সব সমস্যার সমাধান নয়।

 

আগে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। তবে এখানে একটি ভৌত দ্বন্দ্ব দেখা দেয়: রাজনীতি ও নির্বাচনের পক্ষে যারা, তারা বলছেন গণতন্ত্র মানলে নির্বাচনকে সম্মান করতে হবে; নির্বাচনই প্রতিনিধি সরকার এনে দেয়। অপর পক্ষে, যারা বলছেন দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার ছাড়া নির্বাচন তার কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না, তাদের বক্তব্যকে অনেকে নির্বাচনকে দুর্বল করা বা রাজনীতিকে দায়িত্বহীন করা হিসেবে দেখছেন।’

 

জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে বাস্তবে উন্নতি করতে চাইলে রাজনৈতিক দল ও রাজনীতি অব্যাহত থাকবে। দেশ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ছাড়া বিকল্প এত সহজ নেই।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের দিকে চোখ তুরস্কের, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ১১ বিলিয়নের চুক্তি

» প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা

» মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন পাঁচজন

» বিশেষ অভিযানে ৮১১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

» মিঠুনের মেয়ে বিদ্যা

» রাবি শিক্ষকের বিতর্কিত মন্তব্য, শাস্তির দাবি জানাল রাকসু

» বিশ্বকাপ নিয়ে মেসির ইঙ্গিত: খেলতে চান, তবে শর্ত একটাই!

» বর্ষা ছুঁয়ে হেমন্ত বিকেল

» বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১৩ জন গ্রেফতার

» পিস্তলসহ একজন আটক

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

দেশ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ছাড়া বিকল্প নেই : জাহেদ

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে আমেরিকায় আছেন। সেখানে বিখ্যাত সঞ্চালক মেহেদী হাসানের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান নিজের ইউটিউব চ্যানেল জাহেদস টেইক-এ এসে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘পুরো সাক্ষাৎকারের মাত্র পাঁচ মিনিটের একটি প্রিভিউ ও কিছু ক্লিপ থেকে রাজনৈতিক বিচারে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছে।

 

সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর পেরিয়ে গেলেও কেন এখনো জাতীয় নির্বাচন হয়নি এবং সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেও অনেকেই এখনই নির্বাচন চান। নেপালসহ অন্যান্য দেশ দ্রুত নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রাখছে, তাহলে বাংলাদেশ কেন প্রায় ১৮ মাস সময় নিচ্ছে?’
প্রধান উপদেষ্টা উত্তরে বলেন, ‘অনেক মানুষ নির্বাচন চাইছে কিন্তু জনমত বিভক্ত; কেউ বলছে আপনারাই থাকুন পাঁচ বছর, দশ বছর বা আরো বেশি। তবে শুধু নির্বাচন করলেই সব সমস্যা মিটবে না; আগে কাঠামোগত সংস্কার দরকার। বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও নির্বাচন ব্যবস্থার জটগুলো ঠিক করে নেওয়া জরুরি, যাতে পুনরায় একই দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহার না ঘটতে পারে।

 

জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘ড. ইউনূসের ভাষ্য অনুযায়ী জনগণ আপনিই থাকুন ৫/১০/৫০ বছর বলছে। এটা অনেকেই দাস্যমূলক বা ডেরোগ্যাটোরি মনে করেছেন। আরো কিছু লোক মনে করেন, এই যুক্তি আসলে নির্বাচনের স্বীকৃতি ও সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং কিছু লোক ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনায়ও নেমেছেন।

 

অনেক পরিচিত ব্যক্তির অভিমতও এখানে উল্লেখযোগ্য। উদাহরণ স্বরূপ, ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমের মত এক সময়কার গণ-আন্দোলনকারীরা এখন বলে থাকেন, নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত হলে যেকোনো সরকার থাকুক, সেটি তাদের তেমন সমস্যায় ফেলবে না; অর্থাৎ দলের বিভাজনই প্রধান বিষয় নয়, নাগরিক অধিকারই এসেছে প্রথম সারিতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের মধ্যে একাংশ মনে করে নির্বাচিত স্থায়ী সরকার তাদের ভাগ্য বদলাবে না যদি সেই সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত থাকে। ফলে তারা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চাইছে, যা প্রয়োজনে অস্থায়ী সরকারের হাতে দীর্ঘতর সময়ের প্রয়োজন মনে হতে পারে। ড. ইউনূস এ ভাবনাকে তুলে ধরে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মানুষ যদি সুশাসন ও দুর্নীতি-হীনতা চায়, তাহলে নির্বাচনই সব সমস্যার সমাধান নয়।

 

আগে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। তবে এখানে একটি ভৌত দ্বন্দ্ব দেখা দেয়: রাজনীতি ও নির্বাচনের পক্ষে যারা, তারা বলছেন গণতন্ত্র মানলে নির্বাচনকে সম্মান করতে হবে; নির্বাচনই প্রতিনিধি সরকার এনে দেয়। অপর পক্ষে, যারা বলছেন দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার ছাড়া নির্বাচন তার কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না, তাদের বক্তব্যকে অনেকে নির্বাচনকে দুর্বল করা বা রাজনীতিকে দায়িত্বহীন করা হিসেবে দেখছেন।’

 

জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে বাস্তবে উন্নতি করতে চাইলে রাজনৈতিক দল ও রাজনীতি অব্যাহত থাকবে। দেশ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ছাড়া বিকল্প এত সহজ নেই।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com